Spotting
 Timeline
 Travel Tip
 Trip
 Race
 Social
 Greeting
 Poll
 Img
 PNR
 Pic
 Blog
 News
 Conf TL
 RF Club
 Convention
 Monitor
 Topic
 #
 Rating
 Correct
 Wrong
 Stamp
 PNR Ref
 PNR Req
 Blank PNRs
 HJ
 Vote
 Pred
 @
 FM Alert
 FM Approval
 Pvt

RailCal app

site support

चलती है (ग्वालियर-भोपाल वाया गुना बीना ICE) उड़ती है धूल जलते है दुश्मन खिलते है फूल - Adi Singh

Search Forum
<<prev entry    next entry>>
Blog Entry# 2078541
Posted: Dec 02 2016 (21:05)

No Responses Yet
General Travel
41603 views
0

Dec 02 2016 (21:05)   BARU/Baharu (2 PFs)
Dj.Railfan1982~
Dj.Railfan1982~   4047 blog posts
Entry# 2078541            Tags  
মনমোহিনী মোয়া
হিমেল হাওয়ায় মন উদাসী। শীত মানেই নানান লোভনীয় খাবার দাবারের ছড়াছড়ি। সেই রকমই এক খাবারের সুলুকসন্ধানে এবার আমরা দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। কি, একটু আন্দাজ করতে পারছেন কি? ঠিকই ধরেছেন জয়নগরের মোয়ার মনমোহিনী গন্ধ এবং স্বাদের টানে সকাল সকাল শিয়ালদা থেকে চেপে বসলাম লক্ষ্মীকান্তপুর লোকালে। ভিড়ে ঠাসা ট্রেনে কলকাতা থেকে বারুইপুর হয়ে জয়নগর। প্রথমেই বলে রাখি, আমাদের গন্তব্য কিন্তু জয়নগর নয়। প্রশ্ন উঠতেই পারে জয়নগরের মোয়া খেতে অন্য কোথাও কেন? মজাটা সেখানেই, নামে জয়নগরের মোয়া হলেও এই মোয়ার আঁতুড়ঘর বহড়ু গ্রাম।
জয়নগরে ঢোকার আগেই পড়ে ছোট্ট জনপদ বহড়ু। কনকচূড় ধান এবং ভাল
...
more...
মানের নলেন গুড়ের মিশেলে সেই অপূর্ব স্বাদের মোয়ার জন্ম এ গ্রামেই। বাস যোগাযোগ তেমন না থাকায় ট্রেনে যাওয়াই সুবিধা। ফাঁকা ফাঁকা ষ্টেশনে নেমে ভ্যান রিকশা চেপে রওনা দিলাম বহড়ু বাজারের দিকে। শোনা যায় এই মোয়ার জনক এই এলাকারই ‘যামিনীবুড়ো’। যিনি বাড়িতে এক অনুষ্ঠানে নিজের ক্ষেতের কনকচূড় ধানের খইয়ে নলেন গুড় মাখিয়ে মোয়া তৈরি করে পরিবেশন করেছিলেন। তারপর, বাকিটা তো ইতিহাস।
আলাপ হল স্থানীয় বাসিন্দা শেখ রফিকের সঙ্গে। রফিকবাবুরা বহুদিন ধরে বহড়ুর বাসিন্দা। একটু একটু করে বহড়ুকে বেড়ে উঠতে দেখেছেন। তার কাছেই শুনছিলাম নানান কথা। জয়নগর-বহড়ু ছাড়াও দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপি, কাকদ্বীপ, নামখানা এলাকায় প্রায় পাঁচশো বিঘা জমিজুড়ে কনকচূড় ধানের চাষ হয়। অন্য জেলায় এই ধানের চাষ সেভাবে হয় না। শীতকালে এই কনকচূড় ধান থেকে খই তৈরি করা হয়। এখানকার নলেন গুড়ও উন্নত মানের। বড় কড়াইয়ে নলেন গুড় জ্বাল দেওয়া হয়। অল্প গরম গুড়ে কনকচূড় ধানের খই দেওয়া হয়। ধীরে ধীরে সেই খইয়ের সঙ্গে মিশতে থাকে নলেন গুড়। তারপর ওই গুড়মাখা খই ঠান্ডা হয়ে যাওয়ার পর ভাল ঘি ও এলাচ গুঁড়ো মাখিয়ে মোয়া তৈরি হয়। সপ্তাহব্যাপী এই মোয়া তাজা থাকে। নরম খইয়ের মোয়া মুখে দিলে গলে যায়।
অন্য জেলায় কনকচূড় ধান এবং উন্নত মানের নলেনগুড় একত্রে মেলে না। তাই অন্যত্র এত ভাল মানের মোয়াও হয় না। সাধারণ খইয়ের মোয়া শক্ত হয়, সেই স্বাদ গন্ধও আসে না। অন্য জায়গায় এই মোয়া তৈরি হলেও তাতে কৃত্রিম গন্ধ প্রয়োগ করা হয়। সে ক্ষেত্রে বহড়ুর মোয়ার গন্ধ পাওয়া গেলেও স্বাদে তা ধারে-কাছে আসে না। সৌন্দর্য এবং স্বাদ বাড়াতে এখন মোয়ার উপরে কিসমিস ও ক্ষীর দেওয়া হচ্ছে।
বহড়ুতে মোয়ার বহু প্রস্তুতকারক বা দোকান থাকলেও বীণাপাণি বা শ্যামসুন্দরের নামই সবচেয়ে আগে আসে। এদের মধ্যে আবার বীণাপাণি মিষ্টান্ন ভান্ডার প্রাচীন। প্রায় ১০০ বছরেরও পুরনো এই দোকানের মোয়া বিখ্যাত। পাশাপাশি জনপ্রিয় রঞ্জিত ঘোষ, বাবলু ঘোষের শামসুন্দর মিষ্টান্ন ভান্ডারও। তবে এখন আরও বহু মোয়ার দোকান হয়ে গিয়েছে এ তল্লাটে। এদের কাছ থেকে উন্মোচিত হল মোয়ার নামের পেছনে জয়নগরের রহস্যটি। আসলে বহড়ু প্রাচীন জনপদ হলেও বহু বছর আগে এখানে তেমন বড় বাজার ছিল না। তাই মোয়া নিয়ে গিয়ে বিক্রি করতে হত জয়নগরের হাটে। যারা হাট থেকে মোয়া কিনে নিয়ে যেতেন তাদের মুখেই ক্রমশ জয়গরের নাম ছড়িয়ে যায়। তখন এখনকার মত সুদৃশ্য প্যাকেট বা বাক্সও পাওয়া যেত না। তাই মোয়া তৈরি করলেও বহড়ুর নাম থেকে গেল অন্ধকারেই। বছর দশেক আগে থেকে এখানকার প্রায় সব দোকানই তাদের মোয়ার বাক্সের গায়ে বহড়ুর মোয়া বলেই উল্লেখ করে। জয়নগরেও অবশ্য এখন মোয়া তৈরি হচ্ছে, কিন্তু মোয়ার বনেদিয়ানা বহড়ুতেই।
গুড়ের গুণমান অনুযায়ী মোয়ার দাম নির্ভর করে। কেজি প্রতি মোটামুটি ১২০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত হয় মোয়ার দাম। তবে আগের মত উন্নত মানের গুড়ের বড় অভাব। অভাব, ভালো খইয়েরও। সেই সঙ্গে জুটেছে শীতের খামখেয়ালীপনাও। সব মিলিয়ে ভালো মানের মোয়া তৈরি করাটা এখন বেশ কষ্টকর। তবু তার মাঝেই চেষ্টা করে চলেছেন বহড়ুর মোয়া প্রস্তুতকারকেরা। জনপ্রিয়তা থাকলেও পরিকাঠামোর অভাবে জয়নগরের, থুড়ি বহড়ুর মোয়া এখনও রাজ্যের সর্বত্র পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে না বলে আক্ষেপ রয়েছে ব্যবসায়ীদের।
আগেই বলেছি বহড়ু একটি প্রাচীন বর্ধিষ্ণু গ্রাম। তাই এখানে মোয়া ছাড়াও আশেপাশে ছড়িয়ে নানা দর্শনীয় স্থানও। বাজারের ঠিক গায়েই রয়েছে বিশাল দীঘি। কাজল কালো দীঘির জলে খেলা করে হাঁস। দীঘির পাড়ে খানিকক্ষণ বসতে কিন্তু মন্দ লাগবে না। দীঘির পাশেই রয়েছে প্রাচীন শিব মন্দির। সার দিয়ে দাঁড়ানো পাঁচটি শিব মন্দিরে স্থানীয় মানুষজনের ভক্তি এবং যত্নের ছাপ স্পষ্ট। সামনেই ছোট একটি ভাতের হোটেল দেখে মধ্যাহ্ন ভোজনটিও সেরেই নিলাম এই ফাঁকে।
খ্রীষ্টীয় উনিশ শতকের প্রথমদিকে, বহড়ুগ্রামে, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দেওয়ান নন্দকুমার বসু মহাশয় বৃদ্ধা মায়ের জন্য নিজ গৃহেই মথুরা-বৃন্দাবন রচনা করবেন বলে মনস্থির করেছিলেন। সেই মত চুনার থেকে পাথর ও জয়পুর থেকে স্থপতি এনে মন্দির নির্মাণ হল, মন্দির গৃহে শ্যামসুন্দর স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত হলেন। রয়েছে সেই মন্দিরটিও।
এই মন্দির গৌড়ীয় বৈষ্ণব-ধর্মাশ্রিত শ্রীমৎ ভাগবত ও গীতগোবিন্দের কাব্যঅলঙ্কার ও রসশাস্ত্র-সমন্বিত রূপের ছন্দময় এক আশ্চর্য প্রকাশ। আপামর বাঙালির আদরের কৃষ্ণলীলা ও গৌরাঙ্গলীলার শ্রেষ্ঠতম ভক্তি নিবেদন। বাংলার পটের সঙ্গে রাজস্থানী শিল্প-ভাবধারার এক অপূর্ব সমন্বয়। পাতলা চুনবালির আস্তরনে চুনা পাথরের এক দেওয়ালে কৃষ্ণের লীলা-অভিসার তো অন্য দেওয়ালে ষড়ভূজ চৈতন্যের জ্ঞান-অভিসার। এ সবই বাংলা ১২৩২ সনে, ইংরেজি ১৮২৫ খ্রীষ্টাব্দে, বর্ধমান জেলার দাঁইহাট-নিবাসী ভক্তপ্রাণ শিল্পী গঙ্গারাম ভাস্করের আঁকা বাংলার অন্যতম প্রাচীন ভিত্তিচিত্র।
মন্দিরের লাগোয়া জমিদার বাড়িটি প্রায় অবলুপ্ত। আশেপাশে আধুনিক নক্সার বিভিন্ন বাড়ি তৈরি হয়েছে। তারই মাঝে এখনও টিকে রয়েছে ঠাকুর দালানটি। তবে তার অবস্থাও মোটেই ভালো নয়। বিডিও অফিস লাগোয়া ঠাকুরদালান এবং মন্দিরটির সামনের মাঠে রয়েছে রাস মঞ্চ।
এবার পা বাড়ালাম দক্ষিণ পাড়ার দিকে। দক্ষিণ পাড়াতেই বাড়ি এক বিখ্যাত মানুষের। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। প্রবাদ প্রতিম এই সঙ্গীত শিল্পীর পৈতৃক ভিটে বহড়ুরএই দক্ষিণ পাড়াতেই। শৈশবে বেশ কিছুটা সময় এই গ্রামেই কাটিয়েছেন হেমন্ত। পরে তারা কলকাতায় চলে যান। সেই বাড়ি অবশ্য এখন আর নেই। রয়েছে মুখোপাধ্যায় পরিবারের সেই জমিটি এবং বাড়ি লাগোয়া পুকুরটি। পাশে অবশ্য এখন থাকেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের জ্ঞাতি-গুষ্টিরা।
আরো বেশ কয়েকজন স্বনামধন্যের জন্ম হয়েছে বহড়ুতে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য, কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়। ১৯৩৩ সালের ২৫ শে নভেম্বর, বহড়ুর ময়দা গ্রামে জন্ম। শৈশবে পিতৃহীন হন, বহড়ুতে মাতামহের কাছে ও পরে বাগবাজারে মাতুলালয়ে বড় হন। আরও একজন ডাঃ নীলরতন সরকার। কলকাতায় নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল যার নামে। নীলরতনও জন্মেছিলেন বহড়ুতেই। তিন স্বনামধন্য ব্যক্তিত্বই পড়েছিলেন বহড়ু উচ্চ বিদ্যালয়ে। বাজারের পাশেই রয়েছে এই বিখ্যাত মানুষদের স্মৃতি বিজড়িত স্কুলটি। একঝলক দেখে আসতে পারেন আপনিও।
সারাটা দিন ঘোরাঘুরি করতে করতে কখন যে বিকেল হয়ে গিয়েছে টেরই পাইনি। সম্বিত ফিরল রফিকবাবুর কথায়, সত্যি তো চায়ের জন্য গলাটা শুকিয়ে একেবারে কাঠ। না, যেখানে সেখানে চা খেতে দিলেন না রফিকবাবু। সোজা নিয়ে গেলেন শৈলেনের চা এর দোকানে। শৈলেনের চা নাকি এ তল্লাটে বিখ্যাত, দূরদূরান্তের মানুষজন নাকি এই চা খেতে আসে এখানে। চায়ের দোকানে বসে থাকা মানুষজনও সায় দিলেন একথার সত্যতায়। এ পথ দিয়ে যাওয়ার পথে নাকি গাড়ি দাঁড় করিয়ে অনেকে চা খান। আমাদের দেখে শৈলেনবাবুও বেশ মন দিয়ে তৈরি করলেন চা। হ্যা, একথা স্বীকার করতেই হবে, চা-টা শৈলেন ভালোই বানান। আমরা থাকতে থাকতেই দেখলাম কয়েকজন গাড়ি থামিয়ে চা খেয়ে গেলেন। চায়ের পর এবার একটু যেন খিদে খিদে পেয়েগেল। সে কথা প্রকাশ্যে আনতে সকলেই সমস্বরে জানালেন পচার চপের কথা। মোয়ার মতই নাকি এখানকার পচার চপও বিখ্যাত। চেখে দেখা হল সেই চপও।
এত ঘোরাঘুরি, খাওয়া দাওয়ার মাঝেই পড়ে এল বেলা। আলো কমতেই বেশ একটা শীত শীত ভাব ছড়িয়ে পড়ল চারদিকে। এবার তবে ফিরতে হয়। বাজার থেকে সেরা মোয়াটা কিনে নিয়ে ফের চেপে বসলাম ভ্যান রিকশায়। বহড়ু ষ্টেশনে যখন পৌঁছলাম তখন সন্ধে অবসর নেবে। গ্রাম্য ঠান্ডার আমেজের মাঝেই নজর পড়ল প্ল্যাটফর্মে বিক্রি হচ্ছে গরম গরম ঘুগনি। পাঁচ টাকায় বেশ প্লেট ভরা অনেকটা ঘুগনি মিলল। খেতেই খেতেই ঘুগনির প্লেটে জোরাল আলো, প্ল্যাটফর্মে ঢুকছে আপ নামখানা লোকাল।

Translate to English
Translate to Hindi
Scroll to Top
Scroll to Bottom
Go to Desktop site
Important Note: This website NEVER solicits for Money or Donations. Please beware of anyone requesting/demanding money on behalf of IRI. Thanks.
Disclaimer: This website has NO affiliation with the Government-run site of Indian Railways. This site does NOT claim 100% accuracy of fast-changing Rail Information. YOU are responsible for independently confirming the validity of information through other sources.
India Rail Info Privacy Policy