संपूर्ण क्रान्ति है तो जहां है

পুরুলিয়া, ১৪ জুন : চলতি মাসের ১৫ তারিখ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ঝাড়গ্রাম-পুরুলিয়া-ধানবাদ মেমু প্যাসেঞ্জার। একই দিনে বন্ধ হচ্ছে রাঁচি-ঝালদা-কোটশিলা-ধানবাদ প্যাসেঞ্জার, মুরি-ঝালদা-কোটশিলা-ধানবাদ প্যাসেঞ্জার, বোকারো-আদ্রা-হাওড়া প্যাসেঞ্জারের মতো ট্রেন। এছাড়া ১৮ তারিখ বন্ধ হচ্ছে রাঁচি-আসানসোল-হাওড়া ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস। যার প্রভাব পড়েছে পুরুলিয়ায়। কারণ ট্রেনগুলি সবই পুরুলিয়া হয়ে যায়। ফলে সমস্যায় পড়েছেন পুরুলিয়াবাসী। কিন্তু, কেন বন্ধ হচ্ছে ট্রেন ?
কারণ আগামী ২০ জুন থেকে চিরতরে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে পূর্ব মধ্য রেলের ধানবাদ ডিভিশনের চন্দ্রপুরা থেকে ধানবাদ রেলপথ। ওই অঞ্চলে রেল লাইনের নিচে সঞ্চিত কয়লায় ছড়িয়ে গেছে আগুন। তাই নিরাপত্তার স্বার্থেই বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে রেলপথ। তাই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ওই রেল শাখা দিয়ে চলা যাবতীয় যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেন। বর্তমানে ২৬ জোড়া যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করে ওই রেলপথে। রেল মন্ত্রকের নির্দেশ অনুসারে এরমধ্যে...
more...

১৯ জোড়া ট্রেনই অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। রেলপথটি ঝাড়খণ্ড রাজ্যের মধ্যে হলেও এর প্রভাব পড়েছে পুরুলিয়ায়। বন্ধ হওয়া ট্রেনের মধ্যে রয়েছে রাঁচি-আসানসোল-হাওড়া ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস, ঝাড়গ্রাম-পুরুলিয়া-ধানবাদ প্যাসেঞ্জার, বোকারো-আদ্রা-হাওড়া ফাস্ট প্যাসেঞ্জার, ধানবাদ-মুরি প্যাসেঞ্জার, রাঁচি-ধানবাদ প্যাসেঞ্জার।
এই সব ট্রেনগুলিই দক্ষিণ পূর্ব রেলের আদ্রা ও রাঁচি ডিভিশনের উপর দিয়ে যাতায়াত করে। চন্দ্রপুরা-বোকারো-কোটশিলা-মুরি, চন্দ্রপুরা-ভজুডি-আদ্রা এবং বোকারো-পুরুলিয়া রেল শাখার উপর দিয়ে চলা এই ট্রেনগুলির বহু যাত্রী পুরুলিয়া জেলার। এছাড়াও ঝালদা, তুলিন, বেগুনকোদর, কোটশিলা, পুন্দাগ, গড়জয়পুর, গৌরীনাথধাম, চাষ রোড, সাঁওতালডি, রুকনি, শাঁখা স্টেশনের যাত্রীরা সরাসরি প্রভাবিত হচ্ছেন এই ট্রেনগুলি বন্ধ হওয়ার জন্য। সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তুলিন-ঝালদা-কোটশিলা-পুন্দাগ রেল শাখার যাত্রীরা। যে ট্রেনগুলি বন্ধ হচ্ছে তার সিংহভাগই চলে এই শাখাটি দিয়ে। কোটশিলা এলাকার ব্যাবসায়ীরাও হতাশ রেলের এই সিদ্ধান্তে।
তারা জানায়, ধানবাদ চন্দ্রপুরা রেলপথ বন্ধ হয়ে গেলেও যে ট্রেনগুলি বন্ধ করে দেওয়া হল তা চালানো যেতেই পারত। শুধু সেগুলিকে শর্ট টার্মিনেট করে দিতে হত। অর্থাৎ ধানবাদ পর্যন্ত না টেনে চন্দ্রপুরা পর্যন্ত টানলেই চলত। রেলের পক্ষে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া খুব কঠিন নয় বলে জানান দক্ষিণ পূর্ব রেলের প্রাক্তন স্টেশন ম্যানেজার অচিন্ত্যময় বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “ধানবাদ-চন্দ্রপুরা ৩৪ কিলোমিটার রেলপথ রেলের মানচিত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রেল শাখা। এটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রেলকে বিকল্প পথের সন্ধান করতে হবে। কিছু ট্রেনকে গোমো দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ইতিমধ্যেই ধানবাদ গোমো গ্র্যান্ড কর্ড লাইনে ক্ষমতার থেকে পঞ্চাশ শতাংশ বেশি ট্রেন চলছে। কাজেই এখানে বেশি চাপ দেওয়া সম্ভব নয়। তবে দক্ষিণ পূর্ব রেল ইচ্ছে করলে ঝাড়গ্রাম-পুরুলিয়া-ধানবাদ, রাঁচি-ধানবাদ, মুরি-ধানবাদ প্যাসেঞ্জারকে বোকারোতে শর্ট টার্মিনেট করতে পারে। যেহেতু এটি দক্ষিণ পূর্ব রেলের অন্তর্গত এলাকা তাই জ়োনাল স্তরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব। একইভাবে রাঁচি হাওড়া ইন্টারসিটি ট্রেনটিকেও চালানো সম্ভব। ওই ট্রেনটি সপ্তাহে তিনদিন রাঁচি থেকে ধানবাদ আসানসোল-বর্ধমান হয়ে হাওড়া যায়। বাকি তিন দিন ট্রেনটি পুরুলিয়া-টাটানগর-খড়গপুর হয়ে হাওড়া যায়। আপাতত ট্রেনটিকে সপ্তাহে ছ’দিনই পুরুলিয়া-টাটানগর-খড়গপুর হয়ে হাওড়া পর্যন্ত চালানো সম্ভব। এক্ষেত্রেও পুরো এলাকাটি দক্ষিণ পূর্ব রেলের অন্তর্গত হওয়ায় জ়োনাল স্তরেই এই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন আধিকারিকরা।” তাই জনপ্রতিনিধিদের রেলের উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
ওই শাখার নিয়মিত যাত্রী পেশায় শিক্ষক পার্থ দাস বলেন, “এভাবে ট্রেন যে বন্ধ হয়ে যেতে পারে তা ভাবতেই পারছি না। গরমের ছুটি শেষ হয়ে গেছে। এরপর ট্রেন বন্ধ হবার জন্য কীভাবে যাতায়াত করব বুঝতে পারছি না।”