রূপোলি পর্দায় বারবার ফিরেছে খেলনা রেলের রোম্যান্স জড়ানো নস্ট্যালজিয়া। সেই ঐতিহ্য আজ অতীত। ২০১২- র জুলাইতে ধস লাইন ভেঙে বন্ধ হয়ে যায় নিউ জলপাইগুড়ি থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত টয় ট্রেনের চলাচল।
বৃহস্পতিবার, বিশ্ব ঐতিহ্য দিবসে পাহাড়-সমতলের টয় ট্রেন
প্রেমীরা ঘরোয়া আলোচনায় ফের ট্রেন চালুর বিষয় নিয়ে নানা মহলে দরবারের সিদ্ধান্তও নিয়েছেন। উদ্যোগে সামিল হয়েছেন ট্যুর অপারেটররাও।সম্প্রতি শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত টয় ট্রেন চলাচল শুরুর জন্য রেল মন্ত্রকের কাছে আর্জি জানিয়েছে জিটিএ।
জিটিএ সূত্রের খবর, আর্জি জানানোর পরে প্রাথমিক ভাবে অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। জিটিএ-এর তরফে রোশন গিরি, বিনয় তামাংরা জানান, তাঁরাও রেলমন্ত্রীর কাছে বিষয়টি জানিয়েছেন। দার্জিলিং হিমালয়ান রেলের তরফে এক কর্তা বলেন, “টয় ট্রেনের রেলপথের নানা এলাকায় সংস্কার দরকার। সেই কাজ মাঝে ঢিমেতালে হয়েছে। এখন কাজে গতি আনা হয়েছে।”
সম্রাট সান্যালের মতো ট্যুর অপারেটরদের অনেকেই জানান, টয় ট্রেন যাতে দ্রুত ফের পুরানো রুটে চলতে পারে সে জন্য তাঁরাও সংশ্লিষ্ট মহলে অনুরোধ জানিয়েছেন।
.
১৮৮০ এর ২৩ অগস্ট প্রথম চলেছিল টয় ট্রেন। পরের বছর ৪ জুলাই থেকে শুরু হয় এই খেলনা রেলের আনুষ্ঠানিক যাত্রা। এর টানেই দেশ-বিদেশ থেকে বহু পর্যটক এসেছেন দার্জিলিঙে। বস্তুত, টয় ট্রেনের সৌজন্যে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হিসেবে ইউনেস্কোয়
তালিকায় ১৪ বছর আগে তালিকাভুক্ত হয় দার্জিলিং হিমালয়ান রেল।
মমতা রেলমন্ত্রী থাকাকালীন টয় ট্রেনকে জনপ্রিয় করতে একাধিক প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেন। কাজও শুরু হয়েছিল। রেল সূত্রের
খবর, অনেকগুলি প্রকল্পের কাজ বর্তমানে কার্যত বন্ধ।
২০১২-র ২০ জুলাই ধস নেমে তিনধারিয়ার কাছে ভেঙে পড়ে ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়ক। ভেঙে পড়ে পথ ঘেঁষে চলা টয় ট্রেনের লাইনটিও। তখন থেকেই বন্ধ নিউ জলপাইগুড়ি থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত ৭৮ কিলোমিটার পথে টয় ট্রেনের চলাচল। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত মোট ২০ টি স্টেশন রয়েছে।
বর্তমানে দার্জিলিং থেকে কার্শিয়াং পর্যন্ত মাত্র ৮ টি স্টেশনের মধ্যে চলাচল করছে টয় ট্রেন। প্রায় এক বছর টয়ট্রেনের চলাচল বন্ধ থাকায়
পর্যটকরা এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। পর্যটন ব্যবসায়ী সম্রাট সান্যাল বলেন, “দ্রুত এই রেলপথ ঠিক করা না হলে ঐতিহ্য হারাবে ‘কুইন অব হিলসে’র অন্যতম আকর্ষণ এই টয় ট্রেন।” তিনধারিয়াতে টয় ট্রেনের ওয়ার্কশপটিও ২০১১ এর ২৮ সেপ্টেম্বর ধস নেমে নষ্ট হয়ে যায়। টয় ট্রেনের লাইনের পাশাপাশি এই
ওয়ার্কশপটি দ্রুত মেরামতির কথার দাবিও রয়েছে পাহাড়- সমতলের বাসিন্দাদের তরফে।
দার্জিলিং এর জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন জানান, ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাঁর আশ্বাস,“কাজ চলছে, আশা করি দ্রুত তা শেষ হয়ে যাবে।”
পাহাড়, সমতল এখন আছে অধীর অপেক্ষায়।কুয়াশা, রোদ গায়ে মেখে ঐতিহ্যের খেলনা রেল আবার যাত্রা শুরু করুক চেনা পথে।
.
source :
click here